ঢাকাশুক্রবার , ১১ এপ্রিল ২০২৫
  1. #টপ৯
  2. #লিড
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. উদ্যোক্তা
  7. কৃষি
  8. ক্যাম্পাস
  9. খেলাধুলা
  10. গণমাধ্যম
  11. জাতীয়
  12. দেশজুড়ে
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. পজিটিভ বাংলাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুষ্টিয়ায় চুরির অভিযোগে তিনজনকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন, একজনের মৃত্যু

azad
এপ্রিল ১১, ২০২৫ ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

দেশের চিত্র ডেস্ক :

কুষ্টিয়ায় চুরির অভিযোগে এক যুবককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ (১০ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার সকালে শহরের রেনউইক চর এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সুরমান খান (৩৫) রেনউইক চর এলাকার আবুল কালামের ছেলে। সুরমানরা চার ভাই। সবার ছোট আশরাফুল ইসলাম প্রতিবেশী আবদুল হাকিমের বাড়িতে হালিম তৈরির শ্রমিকের কাজ করেন। সুরমান রিকশা চালাতেন। তাঁর স্ত্রীর নাম রূপা খাতুন। তাঁদের এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রতিবেশী আবদুল হাকিম চুরির অভিযোগে সুরমান, আশরাফুল ও তাঁদের এক প্রতিবেশীকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করেছেন। এতে সুরমান নিহত হয়েছেন।

আজ দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সুরমান খানের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হাসপাতালের সামনে নিহত সুরমানের বড় ভাই জয়নাল খান বলেন, গত ঈদের দিন আবদুল হাকিমের বাড়িতে চুরি হয়। তাঁরা অভিযোগে করেন, চুরির সঙ্গে আশরাফুল জড়িত। গত মঙ্গলবার সকালে আশরাফুলকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে শহরের ত্রিমোহনী এলাকায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়। সেন্টারটির মালিক হাকিমের এক আত্মীয়। সেখানে আশরাফুলকে মারধর করে চুরির স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ওই দিন দুপুরে তাঁদের প্রতিবেশী কারিবুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

জয়নাল খান আরও বলেন, আশরাফুলকে নির্যাতনের বিষয়ে জানার পর তাঁরা হাকিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন হাকিম জানান চুরির সঙ্গে আশরাফুল ও সুরমান জড়িত। সুরমানকে দিলে আশরাফুলকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এরপর গতকাল বুধবার সকালে বাড়ির সামনেই সুরমানকে পেয়ে মারধর করেন হাকিম ও তাঁর লোকজন। হুমকি দিয়ে একটা স্ট্যাম্পে জমি দেওয়ার লিখিত নেওয়া হয়; চুরির মালামাল ফেরত দিলে স্ট্যাম্প তুলে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এরপর তাঁরা সুরমানকে ছেড়ে দেন। তবে গতকাল বুধবার বিকেল থেকে সুরমানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখনো আশরাফুল হাকিমের জিম্মাতেই ছিলেন।

আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নিজ বাড়ির কিছুটা দূরে সুরমান খানকে পড়ে থাকতে দেখেন এক প্রতিবেশী। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আজ দুপুরে রেনউইক চর এলাকায় গিয়ে কথা হয় নির্যাতনের শিকার কারিবুল ইসলামের সঙ্গে। নিজের পিঠ দেখিয়ে তিনি বলেন, চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চারতলায় নিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁর পিঠে এখনো রক্ত জমাট বেঁধে লাল হয়ে আছে। সেখানে আশরাফুলকেও তিনি দেখতে পান। তাঁকেও মারধর করা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে হাকিমের লোকজন তাঁকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

নিহত সুরমানের আরেক ভাই সেলিম খান ঘটনাস্থল দেখিয়ে বলেন, ‘আমার ভাইকে নির্যাতন করে লাশ এইখানে ফেলে রেখেছিল হাকিমেরা। আরেক ভাই আশরাফুলকেও ব্যাপক মেরেছে। ঘটনা জানার জন্য পুলিশ তাঁকে (আশরাফুল) থানায় নিয়ে গেছে। হাকিম ও তার লোকজন আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশকে জানাতে পারিনি।’

আবদুল হাকিম শহরের থানা মোড় এলাকায় মিশন স্কুলের সামনে দীর্ঘদিন ধরে হালিম বিক্রি করেন। আজ দুপুরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, আজ সকালে পুলিশ হাকিম ও তাঁকে স্ত্রীকে নিয়ে গেছে।

নিহত সুরমানের লাশের ময়নাতদন্ত করেছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম। তিনি বলেন, লাশের দুই পাসহ পিঠে ব্যাপক মারধরের চিহ্ন রয়েছে। পায়ের কয়েক স্থানে কাটা রয়েছে; পিঠে রক্ত জমাট বাঁধা। গলায় রশি দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরেই ঘটনা ঘটছিল। বিষয়টি কেউ জানাননি। নিহতের শরীরে টর্চারের চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁকে চুরির অভিযোগে মারা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।